সূরা আর রহমান উচ্চারণ ও অনুবাদ সহ

সূরা আর রহমান পবিত্র কোরআনের ৫৫ তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৭৮ এবং রূকু সংখ্যা ৩। এ সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

হযরত আলী (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, প্রতিটি বস্তুরই একটি সৌন্দর্য আছে। আল-কোরানের সৌন্দর্য হল সূরা আর রহমান। (বায়হাকী – শুআবুল ঈমান) এই সূরাটি নিয়মিত পাঠ করলে পাঠকের উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হবে। তার জন্য জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং বেহেশতের দরজা খুলে দেওয়া হবে।

যদি এই সূরাটি নিয়মিত পাঠ করা হয়, কিয়ামতের দিন পাঠকের মুখ পূর্ণিমার মতো উজ্জ্বল হবে এবং পৃথিবীতে তার জীবিকা বৃদ্ধি পাবে। সূর্যোদয়ের সময় এই সুরাটি একাধারে ৪০ দিন পাঠ করলে, মানুষ সহ যে কোন প্রাণী পাঠকের অনুগত হবে এবং যদি সে “ফাবি আইয়ি আ-লা-ই রব্বিকুমা তুকাযজিবান” পাঠ করার সময় সূর্যের দিকে আঙুল তুলে দেয়।

আজ আমরা সূরা আর রহমান এর আরবী, উচ্চারণ ও বাংলা অনুবাদ এবং এর গুরুত্ব ও ফজিলত সমূহ নিয়ে নিন্মে আলোচনা করবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। ধৈর্য ধরে আমাদের সাথেই থাকুন। তো চলুন শুরু করা যাক-


সূরা আর রহমান

সূরা আর রহমান

 

আরবীঃ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

আরবি উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

বাংলা অনুবাদঃ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

(১)

আরবীঃ الرَّحْمَنُ

আরবি উচ্চারণঃ আর-রহমা-নু

বাংলা অনুবাদঃ পরম করুণাময়,

(২)

আরবীঃ عَلَّمَ الْقُرْآنَ

আরবি উচ্চারণঃ ‘আল্লামাল্ কুরআ-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ তিনি শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন,

(৩)

আরবীঃ خَلَقَ الْإِنْسَانَ

আরবি উচ্চারণঃ খলাক্বল্ ইন্সা-না

বাংলা অনুবাদঃ তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষ,

(৪)

আরবীঃ عَلَّمَهُ الْبَيَانَ

আরবি উচ্চারণঃ ‘আল্লামাহুল বাইয়া-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ তিনি তাকে শিখিয়েছেন ভাষা।

(৫)

আরবীঃ الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ بِحُسْبَانٍ

আরবি উচ্চারণঃ আশ্শামসু অল্ক্বমারু বিহুস্বা-নিঁও।

বাংলা অনুবাদঃ সূর্য ও চাঁদ (নির্ধারিত) হিসাব অনুযায়ী চলে,

(৬)

আরবীঃ وَالنَّجْمُ وَالشَّجَرُ يَسْجُدَانِ

আরবি উচ্চারণঃ অন্নাজ্ব্ মু অশ্শাজ্বারু ইয়াস্জুদা-ন্ ।

বাংলা অনুবাদঃ আর তারকা ও গাছ-পালা সিজদা করে।

(৭)

আরবীঃ وَالسَّمَاءَ رَفَعَهَا وَوَضَعَ الْمِيزَانَ

আরবি উচ্চারণঃ অস্সামা-য়া রফা‘আহা-অওয়াদ্বোয়া‘আল্ মীযা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ আর তিনি আকাশকে সমুন্নত করেছেন এবং দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করেছেন।

(৮)

আরবীঃ أَلَّا تَطْغَوْا فِي الْمِيزَانِ

আরবি উচ্চারণঃ আল্লা-তাত্ব গও ফিল্ মীযা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ যাতে তোমরা দাঁড়িপাল্লায় সীমালঙ্ঘন না কর।

(৯)

আরবীঃ وَأَقِيمُوا الْوَزْنَ بِالْقِسْطِ وَلَا تُخْسِرُوا الْمِيزَانَ

আরবি উচ্চারণঃ অআক্বীমুল্ অয্না বিল্ক্বিস্ত্বি অলা-তুখ্সিরুল্ মীযা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ আর তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে ওযন প্রতিষ্ঠা কর এবং ওযনকৃত বস্তু কম দিও না।

(১০)

আরবীঃ وَالْأَرْضَ وَضَعَهَا لِلْأَنَامِ

আরবি উচ্চারণঃ অল্ র্আদ্বোয়া অদ্বোয়া‘আহা-লিল্আনা-ম্।

বাংলা অনুবাদঃ আর যমীনকে বিছিয়ে দিয়েছেন সৃষ্টজীবের জন্য।

(১১)

আরবীঃ فِيهَا فَاكِهَةٌ وَالنَّخْلُ ذَاتُ الْأَكْمَامِ

আরবি উচ্চারণঃ ফীহা- ফা-কিহাতুঁও অ-ন্নাখ্লু যা-তুল্ আক্মা-ম্।

বাংলা অনুবাদঃ তাতে রয়েছে ফলমূল ও খেজুরগাছ, যার খেজুর আবরণযুক্ত।

(১২)

আরবীঃ وَالْحَبُّ ذُو الْعَصْفِ وَالرَّيْحَانُ

আরবি উচ্চারণঃ অল্ হাব্বু যুল্‘আছফি র্অরইহা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ আর আছে খোসাযুক্ত দানা ও সুগন্ধিযুক্ত ফুল।

(১৩)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?
(১৪)

আরবীঃ خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ صَلْصَالٍ كَالْفَخَّارِ

আরবি উচ্চারণঃ খলাক্বল্ ইন্সা-না মিন্ ছোয়াল্ছোয়া-লিন্ কাল্ফাখ্খ-রি।

বাংলা অনুবাদঃ তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন শুষ্ক ঠনঠনে মাটি থেকে যা পোড়া মাটির ন্যায়।

(১৫)

আরবীঃ وَخَلَقَ الْجَانَّ مِنْ مَارِجٍ مِنْ نَارٍ

আরবি উচ্চারণঃ অখলাক্বল্ জ্বা-ন্না মিম্ মা-রিজ্বিম্ মিন্ নার্-।

বাংলা অনুবাদঃ আর তিনি জিনকে সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াবিহীন অগ্নিশিখা থেকে।

(১৬)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা- তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(১৭)

আরবীঃ رَبُّ الْمَشْرِقَيْنِ وَرَبُّ الْمَغْرِبَيْنِ

আরবি উচ্চারণঃ রব্বুল্ মাশ্রিক্বইনি অরব্বুল্ মাগ্রিবাইন্।

বাংলা অনুবাদঃ তিনি দুই পূর্ব ও দুই পশ্চিমের রব।

(১৮)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা- তুকায্যিবান্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(১৯)

আরবীঃ مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ يَلْتَقِيَانِ

আরবি উচ্চারণঃ মারজ্বাল্ বাহ্রাইনি ইয়াল্তাক্বিয়া-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ তিনি দুই সমুদ্রকে প্রবাহিত করেন, যারা পরস্পর মিলিত হয়।

(২০)

আরবীঃ بَيْنَهُمَا بَرْزَخٌ لَا يَبْغِيَانِ

আরবি উচ্চারণঃ বাইনাহুমা-র্বাযাখুল্ লা-ইয়াব্গিয়া-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ উভয়ের মধ্যে রয়েছে এক আড়াল যা তারা অতিক্রম করতে পারে না।

(২১)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবি আইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা- তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(২২)

আরবীঃ يَخْرُجُ مِنْهُمَا اللُّؤْلُؤُ وَالْمَرْجَانُ

আরবি উচ্চারণঃ ইয়াখ্রুজু মিন্হুমাল্ লু’’লুয়ু অল্ র্মাজ্বা-ন্ ।

বাংলা অনুবাদঃ উভয় সমুদ্র থেকে উৎপন্ন হয় মণিমুক্তা ও প্রবাল।

(২৩)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(২৪)

আরবীঃ وَلَهُ الْجَوَارِي الْمُنْشَآتُ فِي الْبَحْرِ كَالْأَعْلَامِ

আরবি উচ্চারণঃ অলাহুল্ জ্বাওয়া-রিল্ মুন্শা য়া-তু ফিল্বাহ্রি কাল্আ’লা-ম্।

বাংলা অনুবাদঃ আর সমুদ্রে চলমান পাহাড়সম জাহাজসমূহ তাঁরই।

(২৫)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(২৬)

আরবীঃ كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ

আরবি উচ্চারণঃ কুল্লু মান্ ‘আলাইহা-ফা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ যমীনের উপর যা কিছু রয়েছে, সবই ধ্বংসশীল।

(২৭)

আরবীঃ وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ

আরবি উচ্চারণঃ অ ইয়াব্ক্বা-অজ্ব হু রব্বিকা যুল্ জ্বালা-লি অল্ইক্র-ম্।

বাংলা অনুবাদঃ আর থেকে যাবে শুধু মহামহিম ও মহানুভব তোমার রবের চেহারা।

(২৮)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা -তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(২৯)

আরবীঃ يَسْأَلُهُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ كُلَّ يَوْمٍ هُوَ فِي شَأْنٍ

আরবি উচ্চারণঃ ইয়াস্য়ালুহূ মান্ ফিস্ সামা-ওয়া-তি অল্র্আদ্ব্; কুল্লা ইয়াওমিন্ হুওয়া ফী শান্।

বাংলা অনুবাদঃ আসমানসমূহ ও যমীনে যারা রয়েছে, সবাই তাঁর কাছে চায়। প্রতিদিন তিনি কোন না কোন কাজে রত।

(৩০)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৩১)

আরবীঃ سَنَفْرُغُ لَكُمْ أَيُّهَا الثَّقَلَانِ

আরবি উচ্চারণঃ সানাফ্রুগু লাকুম্ আইয়ুহাছ্ ছাক্বলা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ হে মানুষ ও জিন, আমি অচিরেই তোমাদের (হিসাব-নিকাশ গ্রহণের) প্রতি মনোনিবেশ করব।

(৩২)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৩৩)

আরবীঃ يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ إِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ تَنْفُذُوا مِنْ أَقْطَارِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ فَانْفُذُوا لَا تَنْفُذُونَ إِلَّا بِسُلْطَانٍ

আরবি উচ্চারণঃ ইয়া মা’শারল্ জ্বিন্নি অল্ ইন্সি ইনিস্ তাত্বোয়া’তুম্ আন্ তান্ফুযূ মিন্ আক্ব ত্বোয়া-রিস্ সামা-ওয়া-তি অল্র্আদ্বি ফান্ফুযূ; লা-তান্ফুযূনা ইল্লা-বিসুল্ত্বোয়া-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ হে জিন ও মানবজাতি, যদি তোমরা আসমানসমূহ ও যমীনের সীমানা থেকে বের হতে পার, তাহলে বের হও। কিন্তু তোমরা তো (আল্লাহর দেয়া) শক্তি ছাড়া বের হতে পারবে না।

(৩৪)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৩৫)

আরবীঃ يُرْسَلُ عَلَيْكُمَا شُوَاظٌ مِنْ نَارٍ وَنُحَاسٌ فَلَا تَنْتَصِرَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ইর্য়ুসালু ‘আলাইকুমা-শুওয়া-জুম্ মিন্ না-রিঁও অনুহা-সুন্ ফালা-তান্তাছির-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ তোমাদের উভয়ের প্রতি প্রেরণ করা হবে অগিড়বশিখা ও কালো ধোঁয়া, তখন তোমরা প্রতিরোধ করতে পারবে না।

(৩৬)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৩৭)

আরবীঃ فَإِذَا انْشَقَّتِ السَّمَاءُ فَكَانَتْ وَرْدَةً كَالدِّهَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাইযান্ শাক্ব ক্বাতিস্ সামা-য়ু ফাকা-নাত্ র্অদাতান্ কাদ্দিহা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ যে দিন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, অতঃপর তা রক্তিম গোলাপের ন্যায় লাল চামড়ার মত হবে।

(৩৮)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৩৯)

আরবীঃ فَيَوْمَئِذٍ لَا يُسْأَلُ عَنْ ذَنْبِهِ إِنْسٌ وَلَا جَانٌّ

আরবি উচ্চারণঃ ফাইয়াওমাইযিল্লা-ইয়ুস্য়ালু ‘আন্ যাম্বিহী য় ইন্সুঁও অলা-জ্বা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতঃপর সেদিন না মানুষকে তার অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, না জিনকে।

(৪০)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৪১)

আরবীঃ يُعْرَفُ الْمُجْرِمُونَ بِسِيمَاهُمْ فَيُؤْخَذُ بِالنَّوَاصِي وَالْأَقْدَامِ

আরবি উচ্চারণঃ ইয়ু’রফুল্ মুজ¦ রিমূনা বিসীমা-হুম্ ফাইয়ুখাযু বিন্নাওয়া-ছী অল্ আক্ব্ দা-ম্।

বাংলা অনুবাদঃ অপরাধীদেরকে চেনা যাবে তাদের চিহ্নে ও সাহায্যে। অতঃপর তাদেরকে মাথার অগ্রভাগের চুল ও পা ধরে নেয়া হবে।

(৪২)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৪৩)

আরবীঃ هَذِهِ جَهَنَّمُ الَّتِي يُكَذِّبُ بِهَا الْمُجْرِمُونَ

আরবি উচ্চারণঃ হা-যিহী জ্বাহান্নামু ল্লাতী ইয়ুকায্যিবু বিহাল্ মুজ্ব রিমূন্।

বাংলা অনুবাদঃ এই সেই জাহান্নাম, যাকে অপরাধীরা অস্বীকার করত।

(৪৪)

আরবীঃ يَطُوفُونَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ حَمِيمٍ آنٍ

আরবি উচ্চারণঃ ইয়াত্ব ূফূনা বাইনাহা-অবাইনা হামীমিন্ আ-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ তারা ঘুরতে থাকবে জাহান্নাম ও ফুটন্ত পানির মধ্যে।

(৪৫)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবি আইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্ ।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৪৬)

আরবীঃ وَلِمَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ جَنَّتَانِ

আরবি উচ্চারণঃ অ লিমান্ খ-ফা মাক্ব-মা রব্বিহী জ্বান্নাতা-ন্ ।

বাংলা অনুবাদঃ আর যে তার রবের সামনে দাঁড়াতে ভয় করে, তার জন্য থাকবে দু টি জান্নাত।

(৪৭)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৪৮)

আরবীঃ ذَوَاتَا أَفْنَانٍ

আরবি উচ্চারণঃ যাওয়াতা য় আফ্না-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ উভয়ই বহু ফলদার শাখাবিশিষ্ট।

(৪৯)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৫০)

আরবীঃ فِيهِمَا عَيْنَانِ تَجْرِيَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফীহিমা-‘আইনা-নি তাজ্ব রিয়া-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ উভয়ের মধ্যে থাকবে দু টি ঝর্ণাধারা যা প্রবাহিত হবে।

(৫১)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবি আইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৫২)

আরবীঃ فِيهِمَا مِنْ كُلِّ فَاكِهَةٍ زَوْجَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফীহিমা-মিন্ কুল্লি ফা-কিহাতিন্ যাওজ্বা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ উভয়ের মধ্যে প্রত্যেক ফল থেকে থাকবে দু প্রকারের।

(৫৩)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবি আইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা- তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৫৪)

আরবীঃ مُتَّكِئِينَ عَلَى فُرُشٍ بَطَائِنُهَا مِنْ إِسْتَبْرَقٍ وَجَنَى الْجَنَّتَيْنِ دَانٍ

আরবি উচ্চারণঃ মুত্তাকিয়ীনা ‘আলা ফুরুশিম্ বাত্বোয়া-য়িনুহা-মিন্ ইস্তাব্রাক্ব ; অজ্বানাল্ জ্বান্নাতাইনি দা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ সেখানে পুরু রেশমের আস্তরবিশিষ্ট বিছানায় তারা হেলান দেয়া অবস্থায় থাকবে এবং দুই জান্নাতের ফল-ফলাদি থাকবে নিকটবর্তী।

(৫৫)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্ ।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৫৬)

আরবীঃ فِيهِنَّ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنْسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌّ

আরবি উচ্চারণঃ ফীহিন্না ক্বছিরা-তুত্ব ত্বোর্য়াফি লাম্ ইয়াত্ব মিছ্হুন্না ইন্সুন্ ক্বব্লাহুম্ অলা-জ্বা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ সেখানে থাকবে স্বামীর প্রতি দৃষ্টি সীমিতকারী মহিলাগণ, যাদেরকে ইতঃপূর্বে স্পর্শ করেনি কোন মানুষ আর না কোন জিন।

(৫৭)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা- তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৫৮)

আরবীঃ كَأَنَّهُنَّ الْيَاقُوتُ وَالْمَرْجَانُ

আরবি উচ্চারণঃ কাআন্নাহুন্নাল্ ইয়া-ক্বুতু অর্ল্মাজ্বা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ তারা যেন হীরা ও প্রবাল।

(৫৯)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৬০)

আরবীঃ هَلْ جَزَاءُ الْإِحْسَانِ إِلَّا الْإِحْسَانُ

আরবি উচ্চারণঃ হাল্ জ্বাযা-য়ুল্ ইহ্সা-নি ইল্লাল্ ইহ্সা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ উত্তম কাজের প্রতিদান উত্তম ছাড়া আর কী হতে পারে ?

(৬১)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৬২)

আরবীঃ وَمِنْ دُونِهِمَا جَنَّتَانِ

আরবি উচ্চারণঃ অমিন দূনিহিমা- জ্বান্নাতা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ আর ঐ দু টি জান্নাত ছাড়াও আরো দু টি জান্নাত রয়েছে।

(৬৩)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকাযযিবান।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৬৪)

আরবীঃ مُدْهَامَّتَانِ

আরবি উচ্চারণঃ মুদ্হা-ম্মাতা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ জান্নাত দু টি গাঢ় সবুজ

(৬৫)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৬৬)

আরবীঃ فِيهِمَا عَيْنَانِ نَضَّاخَتَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফীহিমা-আ’ইনা-নি নাদ্দোয়া-খতা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ এ দু টিতে থাকবে অবিরাম ধারায় উচ্ছলমান দু টি ঝর্ণাধারা।

(৬৭)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৬৮)

আরবীঃ فِيهِمَا فَاكِهَةٌ وَنَخْلٌ وَرُمَّانٌ

আরবি উচ্চারণঃ ফীহিমা ফা-কিহাতুঁও অনাখ্লুঁও অরুম্মা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ এ দু টিতে থাকবে ফলমূল, খেজুর ও আনার।

(৬৯)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবি আইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৭০)

আরবীঃ فِيهِنَّ خَيْرَاتٌ حِسَانٌ

আরবি উচ্চারণঃ ফীহিন্না খইর-তুন্ হিসা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ সেই জান্নাতসমূহে থাকবে উত্তম চরিত্রবতী অনিন্দ্য সুন্দরীগণ।

(৭১)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা- তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৭২)

আরবীঃ حُورٌ مَقْصُورَاتٌ فِي الْخِيَامِ

আরবি উচ্চারণঃ হূরুম্ মাক্ব ছূর তুন্ ফিল্ খিয়া-ম্।

বাংলা অনুবাদঃ তারা হূর, তাঁবুতে থাকবে সুরক্ষিতা।

(৭৩)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা- তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৭৪)

আরবীঃ لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنْسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌّ

আরবি উচ্চারণঃ লাম্ ইয়াত্বমিছ্হুন্না ইন্সুন্ ক্বব্লাহুম্ অলা-জ্বা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ যাদেরকে ইতঃপূর্বে স্পর্শ করেনি কোন মানুষ আর না কোন জিন।

(৭৫)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবি আইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা-তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৭৬)

আরবীঃ مُتَّكِئِينَ عَلَى رَفْرَفٍ خُضْرٍ وَعَبْقَرِيٍّ حِسَانٍ

আরবি উচ্চারণঃ মুত্তাকিয়ীনা ‘আলা-রফ্রফিন্ খুদ্ব্রিঁও অ‘আব্ক্বারিয়্যিন্ হিসা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ তারা সবুজ বালিশে ও সুন্দর কারুকার্য খচিত গালিচার উপর হেলান দেয়া অবস্থায় থাকবে।

(৭৭)

আরবীঃ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

আরবি উচ্চারণঃ ফাবিআইয়্যি আ-লা-য়ি রব্বিকুমা তুকায্যিবা-ন্।

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, তুমি তোমার মহান রাব্বুল আলামিনের কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?

(৭৮)

আরবীঃ تَبَارَكَ اسْمُ رَبِّكَ ذِي الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ

আরবি উচ্চারণঃ তাবা-রকাস্মু রব্বিকা যিল্ জ্বালা-লি অল্ইক্রা-ম্।

বাংলা অনুবাদঃ তোমার রবের নাম বরকতময়, যিনি মহামহিম ও মহানুভব।

 

সূরা আর রহমান এর ফজিলত

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি হাদিসে বলেছেন, “সবকিছুরই নিজস্ব সৌন্দর্য আছে। সূরা আর রহমান কুরআনের সৌন্দর্য। পুণ্যের দিক থেকে এটা কোরানের অর্ধেকের সমান। কিছু কিছু বুজুর্গ এই সূরাটিকে কুরআনের বন্ধু বলে উল্লেখ করেছেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যারা প্রতিদিন আল্লাহকে খুশি করার জন্য আসরের নামাজের পর এই সূরাটি পাঠ করে, তাদের মুখ উজ্জ্বল হবে, তাদের স্ত্রী ও সন্তানেরা তাদের বাধ্য হবে, তাদের জীবিকা বৃদ্ধি পাবে এবং তারা জান্নাতের অধিকারী হবে।

এই সূরাটি কোরআনের একটি অনন্য। এর লেখার শৈলী এবং বাক্য গঠন এতটাই স্পর্শকাতর যে, আরবি কবিরা সুরার সুর, ভাষার অনুপ্রেরণা, চিন্তাধারা এবং বক্তব্যের অর্থ দেখে অভিভূত হয়েছিলেন।

“ফাবিয়ি আ-লা-ই রাব্বিকুমা তুকাযজিবান” বাক্যটি কবিদের কোরাস ছন্দের মতো এই সুরায় পুনরাবৃত্তি হওয়ায় এটি খুব সুন্দর এবং সুরেলা হয়ে উঠেছে। এই আয়াতটি আল্লাহ সূরা আর রহমানে ৩১ বার বলেছেন। অবিশ্বাসীরা এর সুরেলা কথা এবং অমিয় বাক্যলাহারীর আবেগ দেখে হতবাক হয়ে যেত!

সূরা আর রহমানের বেশিরভাগ বিষয়বস্তু সর্বশক্তিমান আল্লাহর দুনিয়াবী ও অন্যান্য দুনিয়ার বরকতের বর্ণনা সম্পর্কিত। অতএব, “ফাবি আয়ি আলা ইরাব্বিকুমা তুকায়্যিবান” বাক্যাংশটি বারবার ব্যবহার করা হয় যখনই আল্লাহর বিশেষ অবদানের কথা বলা হয় মানুষকে সতর্ক ও কৃতজ্ঞ হতে উৎসাহিত করা হয়।

এই বাক্যটি পুরো সূরা জুড়ে একত্রিশ বার ব্যবহৃত হয়েছে। এটি অলঙ্কারশাস্ত্রের বিপরীত নয় কারণ প্রতিবার বাক্যটি একটি নতুন বিষয়বস্তুর সাথে যুক্ত থাকে। আল্লামা সুয়ূতী এরকম একটি পুনর্লিখনের নাম দিয়েছেন।

বিশুদ্ধভাষী আরবদের গদ্য ও কবিতায় এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত এবং প্রশংসিত। এর উদাহরণ শুধু আরবিতেই নয়, ফার্সি, উর্দু, বাংলা এবং অন্যান্য ভাষায়ও পাওয়া যায়।

যাইহোক, এই উদাহরণগুলি উদ্ধৃত করার জায়গা নয়। তারপরও জানতে চাইলো। তাফসিরে রুহুল মাআনী এই স্থানে কয়েকটি উদাহরণ উল্লেখ করেছেন।

সূরা আর রহমান মক্কা না মদীনায় নাযিল হয়েছে তা নিয়ে মতভেদ আছে। কুরতুবী কিছু হাদিসের ভিত্তিতে মক্কায় অবতরণ করতে পছন্দ করেছেন।

তিরমিযীতে হযরত জাবির (রা)) বর্ণনা করেন যে, রাসুল (সা)) কয়েকজন লোকের সামনে পুরো সূরা আর রহমান পাঠ করেছিলেন। যখন তারা চুপ হয়ে গেল, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

আমি লাইলাতুল জ্বিনের রাতে জ্বিনদের সামনে এই সূরাটি পাঠ করেছিলাম। প্রভাবের দিক থেকে তারা তাইমার চেয়ে ভালো ছিল। কারণ, যখনই আমি “ফাবি আয়ি আলা ইরাব্বিকুমা তুকাযজিবান” আয়াতটি তিলাওয়াত করতাম, তারা একসঙ্গে বলত:
আমাদের প্রভু, আপনি যে আশীর্বাদ পেয়েছেন তা অস্বীকার করবেন না।

অর্থ, হে আমাদের প্রভু, আমরা আপনার কোন অবদানকে অস্বীকার করব না। সমস্ত প্রশংসা আপনার জন্য।

এই হাদিস থেকে জানা যায় যে, সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিল। কারণ, জ্বীন-রাতের ঘটনা মক্কায় সংঘটিত হয়েছিল। এই রাতে রাসুল (সাঃ) জিনদের কাছে ইসলাম প্রচার করেন এবং তাদেরকে ইসলামী শিক্ষা দেন।

মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে সূরা আর রহমান এর তাৎপর্য বুঝে তার উপর আমল করার তৈফিক দান করুন। আমিন।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x
error: Content is protected !!