সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

সূরা আসর কুরআন মাজিদের ১০৩ তম সূরা। এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৩। সূরা আসর মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে অর্থাৎ মাক্কী সূরা। নিচে সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ দেওয়া হল। এর সাথে সূরা আল আসরের তাফসীরও সংক্ষেপে দেওয়া হয়েছে।

সূরা আসর কোরআনের একটি সংক্ষিপ্ত সূরা। কিন্তু এটি মুসলমানদের জন্য একটি অত্যন্ত তাৎপর্য পূর্ণ সূরা এবং অনেক মুসলমান মনে করেন যে মানুষ যদি এই সূরাটি ভেবেচিন্তে পড়ে এবং তৎ অনুযায়ী আমল করে তাহলে দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের সংশোধনের জন্য যথেষ্ট হবে। সূরা অনুসারে, এই সূরায় আল্লাহ সময়ের শপথ করে বলেছেন যে মানবজাতি অত্যন্ত ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত এবং কেবলমাত্র যারা চারটি জিনিসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছেন। যেমন- ঈমান বা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, সৎকর্ম, অপরকে সত্যের উপদেশ এবং ধর্য্য রাখার উপদেশ দান করেছেন তারা ছাড়া।

সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

 

 

সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

আরবিঃ بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
অনুবাদঃ পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

(১)
আরবিঃ وَٱلْعَصْرِ
উচ্চারণঃ ওয়াল ‘আসর।
অনুবাদঃ কসম যুগের (সময়ের),

(২)
আরবিঃ إِنَّ ٱلْإِنسَٰنَ لَفِى خُسْرٍ
উচ্চারণঃ ইন্নাল ইনছা-না লাফী খুছর।
অনুবাদঃ নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;

(৩)
আরবিঃ إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَتَوَاصَوْا۟ بِٱلْحَقِّ وَتَوَاصَوْا۟ بِٱلصَّبْرِ
উচ্চারণঃ ইল্লাল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি ওয়া তাওয়া-সাওবিল হাক্কি ওয়া তাওয়া-সাও বিসসাবরি।
অনুবাদঃ কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।

 

 

সূরা আসরের তাফসীর

আসর অর্থ কাল বা সময়, যে কাল বা সময় মানুষ পাপ কাজ করে। হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম (রাঃ) বলেন, আসর অর্থ আসরের সালাত বা আসরের সালাতের সময়। তবে প্রথম উক্তিটিই প্রসিদ্ধ বা বিখ্যাত। এই শপথের পর আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই মানুষ মহা ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।

কিন্তু যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয়, অর্থাৎ সৎকাজ করতে ও অন্যকে সৎকাজে উদ্বুদ্ধ করে এবং বিপদে ধৈর্য ধারণ করে এবং অন্যকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়। সৎ কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা যে বাধা ও বিপদের সম্মুখীন হয় তাতে ধৈর্য ধারণ করে, তারা এই সুস্পষ্ট ক্ষতি থেকে মুক্তি পাওয়ার সৌভাগ্যবান।

সময় মানে বিগত সময়-অতীত কালও হতে পারে আবার চলিত সময়ও। এই বর্তমান কাল আসলে দীর্ঘ মেয়াদী নাম নয়। বর্তমান প্রতি মুহূর্তে পেরিয়ে অতীতে পরিণত হচ্ছে। আবার প্রতিটি মুহূর্ত ভবিষ্যতের গর্ভ থেকে বের হয়ে বর্তমান হয়ে ওঠে এবং বর্তমান থেকে আবার অতীতে বিলীন হয়ে যায়। এখানে যেহেতু কোনো বিশেষত্ব ছাড়াই শুধুমাত্র সময়কে শপথ করা হয়েছে, তাই দুই ধরনের সময় বা কাল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অতীতের শপথের অর্থ: মানবজাতির ইতিহাস এটির সাক্ষ্য বহন করে এবং যারা এই গুণাবলী থেকে বঞ্চিত ছিল তারা এর পরিণতি ভোগ করেছে। আর বর্তমান কালের শপথের অর্থ হচ্ছে যে সময় এখন অতিবাহিত হচ্ছে তা আসলে এমন একটি সময় যা বিশ্বের প্রতিটি ব্যক্তি ও জাতিকে কাজ করার জন্য দেওয়া হয়েছে।

 

সুতরাং প্রত্যেকটি কাজ যেহেতু সময়ের মধ্যে সংগঠিত হয় তাই আল্লাহ এখানে সময়ের কসম খেয়েছেন। এ জন্য আমাদের উচিত মানুষ হিসেবে প্রত্যেকটি সময় যেন আমার কল্যানের জন্য ব্যয় হয়। উপরের আলোচনায় আমরা সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ সহ এর ব্যখ্যা আলোচনা করেছি। আল্লাহ আমাদের সকলকে ঈমান এবং আমলের জন্য কবুল করুন। আমিন।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x
error: Content is protected !!