আজ আমরা রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া সহ রোজার সকল নিয়ম কানুন সম্পর্কে এই পেইজে আলোচনা করবো। আশা করি অনেক শিখনীয় বিষয় এখানে পাবেন। তাই ধৈর্য্য ধরে সাথেই থাকুন। হাদীসে হযুর পাক (সাঃ) রমযান মাসের কিছু বিশেষত্ব ও আদাব বর্ণনা করেছেন। প্রথমত রােজা সবর ও ধৈর্য্যের মাস অর্থাৎ কিছুটা কষ্ট অনুভব হলেও আনন্দচিত্তে উহাকে সহ্য করবে। অনেকেই গ্রীষ্মকালে রমযানে অধৈর্য্য হয়ে শােরগােল করে থাকে আবার অনেকেই সেহরী খেতে না পারলে, ভাের হতেই অভিযােগ করে থাকে। মানুষ সাধারণ স্বার্থের জন্য খানা-পিনা, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য সব কিছু বিসর্জন দিয়ে থাকে। তবে কি মাওলার রেজামন্দীর মােকাবিলায় ঐ সবের কোন তুলনা হতে পারে?
হুযুরে পাক (সাঃ) আবার বলেন ইহা সহানুভূতির মাস। অর্থাৎ গরীব দুঃখীদের প্রতি নম্র ব্যবহার করবে। নিজের ইফতারীর জন্য দশটি জিনিষ তৈরী হলে তাদের জন্য কমপক্ষে দুই চারটা ব্যবস্থা করবে বরং উচিত ছিল তাদের জন্য নিজেদের চেয়েও ভাল সেহরী ও ইফতারের ব্যবস্থা করা। সহানুভূতি ও আত্মত্যাগের অসংখ্য ঘটনাবলী সাহাবীদের জীবনে পরিলক্ষিত হয় যা দেখে হতবাক হতে হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন-
“হে ঈমানদারগণ! তােমাদের ওপর রােজা ফরয করে দেওয়া হয়েছে যেমন তােমাদের পূর্ববর্তী নবীদের অনুসারীদের ওপর ফরয করা হয়েছিল। এ থেকে আশা করা যায়, তােমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুণাবলী সৃষ্টি হয়ে যাবে”। (বাকারা : ১৮৩)
রোজার নিয়ত
নিয়ত অর্থ- মনস্থির করা। রােজা রাখবে বলে, মনে মনে ইচ্ছা পোশন করাই যথেষ্ট। মুখে বলা জরুরী নয়। রামাজানের রােজার ক্ষেত্রে রাতে মনে মনে বলবে যে, “আমি আগামীকাল রােজা রাখবাে।” অথবা সাহরীর সময় উঠতে না পারলে, পরে উঠে তৎক্ষণাত বা দিনে ১১টার পূর্বে মনে মনে এরূপ নিয়্যত করবে যে, “আমি আজ রােজা রাখলাম।” মুখে নিয়্যত করা জরুরী নয়। তবে মুস্তাহাব। আরবী ভালভাবে বলতে পারলে এবং বুঝলে আরবীতে নিয়্যত করবে।
রােজাতে নিয়ত করা ফরজ, নিয়ত ব্যতীত রােজা হয় না। মনে মনে ধারণ এবং ইচ্ছা পােষণ করাই নিয়ত। আর “আজ আমি রােজা রেখেছি অথবা সুবহে সাদিকের পূর্বে মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয়া আজ রােজা রেখেছি, এরুপ উচ্চারণ করা মুস্তাহাব। অন্তত অধাদিনের পূর্বেই নিয়ত করা আবশ্যক।
সাহরীর সর্বশেষ এবং ইফতারের সর্বপ্রথম সময়ের দ্বারা বুঝা যাবে যে, রােযা কত ঘণ্টা ও কত মিনিটের । এই সময়কে দু’ভাগে বিভক্ত করে অর্ধ সময়ের পূর্বে রােজার নিয়ত করে নিলে রমাজানের রােজা হবে, অন্যথায় রােজা হবে না।
রোজার নিয়ত আরবীঃ
উচ্চারণঃ “নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম মিন সাহরি রামাদানুল মুবারক। ফারদুল্লাইকা ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আন্তাস্ সামীউল আ’লীম”।
রোজা
“যে লােক এই মাসটি পাবে সে যেন অবশ্যই এই মাসের রােজা পালন করে” (আল কোরআন)। পবিত্র কোরআনে রােজাকে রমাদান হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যার অর্থ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যাবতীয় ইন্দ্রিয় তৃপ্তি থেকে বিরত থাকার নামই হচ্ছে রােজা। রােজা থেকে সঠিক ফায়দা হাসিলের জন্য নিন্মােক্ত বিষয় গুলাে জানা একান্ত প্রয়ােজন।
রোজার প্রকারভেদ
রােজা ছয় প্রকারঃ
১. ফরজ রােজাঃ রমযান মাসের রােজা।
২, ওয়াজিব রােজাঃ কাফফারা রােজা, মানতের রােজা।
৩. সুন্নাত রােজাঃ আশুরার রােজা; (মহররম মাসের ৯, ১০ তারিখ) আরাফাত দিবস, (জিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ,) আইয়ামে বীযের রােজা; চাঁদের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ)
৪. নফল রােজাঃ – ফরজ ওয়াজিব, সুন্নাত বাদে সব রােজা নফল। যেমন- শাওয়াল মাসে যে কোন ৬ দিন রােজা, শাবান মাসের ১৫ তারিখ রােজা রাখা, সােমবার ও বৃহস্পতিবার রােজা রাখা, জিলহজ্জ মাসের ১ম ৮ দিন রােজা রাখা।
৫. মাকরুহ রােজাঃ – শুধুমাত্র শনিবার বা রবিবার রােজা রাখা। – শুধুমাত্র আশুরার দিন রােজা রাখা।
স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রােজা রাখা। – মাঝে কোন বিরতি না দিয়ে ক্রমাগত রােজা রাখা
৬. হারাম রােজাঃ বছরে নিম্নোক্ত ৫দিন রােজা রাখা হারাম – ঈদুল ফিতরের দিন রােজা রাখা। – ঈদুল আযহার দিন রােজা রাখা। – ১১, ১২ ও ১৩ই জিলহজ্জ তারিখে রােজা রাখা।
রােজার ফরজঃ
রােজার ফরজ ৩টিঃ
১. রোজার নিয়ত করা।
২. সুবহে সাদেক হইতে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত সব ধরণের পানাহার থেকে বিরত থাকা।
৩. সুবহে সাদেক হইতে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত ইন্দ্রিয় তৃপ্তি বা যৌন বাসনা পূরণ থেকে বিরত থাকা।
রােজা ফরজ হওয়ার শর্তঃ
১. মুসলিম হওয়া।
২. বালেগ হওয়া।
৩, অক্ষম না হওয়া।
৪. মহিলাদের হায়েজ ও নেফাস হতে পবিত্র হওয়া।
রােজার সুন্নাতঃ
১. সর্বদা নেক কাজ করা।
২. শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রোজা যেমন- হাত, পা, চোখ, মুখ, নাক, কান, জিহ্বা ও অন্তরের রােজা পালন করা।
৩. গরীরদেরকে ও মসজিদ মাদ্রাসায় দান করা।
৪. রমজানের রাতে তারাবীহ নামায আদায় করা।
৫. তারাবীহ নামাযে পবিত্র কুরআন শরীফ খতম করা অথবা শােনা।
৬. সর্বদা দোয়া, দরূদ, তাসবীহ তাহলীল ও কুরআন তেলাওয়াত করতে থাকা।
৭, সময় মত ইফতার করা।
৮. পবিত্র রমযান মাসের মধ্যে ইতিকাফ করা।
রােজার গুরুত্ব
ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের মধ্যে যাকাতের পরই রােযার স্থান গুরুত্বের সাথে বর্ণিত হয়েছে। ইবাদতসমূহের মধ্যে রােযার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। রােযা দ্বারা অভ্যাস অবলম্বনে দুঃখী ও নিরন্নদের ক্ষুধার কষ্ট অনুভবের সুযােগ হয় এবং তা দ্বারা গরীবদের প্রতি করুণা এবং দয়া-মমতা সৃষ্টি হয়ে দানশীলতা ও পরােপকার করায় আগ্রহ সৃষ্টি হয়। তাছাড়া রােযা দ্বারা মানুষের সংযম, ধৈর্য্য, গুণ এবং স্বাস্থ্যগত উপকার সাধিত হয়। রােজার মাধ্যমে মানুষ কর্মী, সক্রিয়তা, সহনশীলতা, কষ্টসহিষ্ণু, নিয়মানুবর্তিতা এবং পরিশ্রমী হওয়ার সুযােগ অর্জন করে। রমযান মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে কুরআন পাকে এরশাদ হয়েছে-
“রমযান এমন একটি মহান মাস, যাতে মানুষের হেদায়েত এবং হেদায়েত বিষয়ক প্রকাশ্য শিক্ষাপূর্ণ কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে, (সত্যকে মিথ্যা এবং খাঁটিকে ভেজাল হতে) পার্থক্যকারী হিসেবে।”
রাসূলে পাক (সাঃ) ইরশাদ করেন-
“যে ব্যক্তি ঈমান গ্রহণের পর নামায আদায় করে, যাকাত দেয়, হজ্জ পালন করে কিন্তু রােযা রাখে না, তাহলে এই ইবাদতসমূহ তার মুক্তির জন্য যথেষ্ট নয়”।
যেহেতু রােজা একটি ফরজ ইবাদত, আর প্রত্যেক ফরজ ইবাদতের একই হুকুম যা পালন না করলে আল্লাহ পাক অসন্তুষ্ট হন। আর আল্লাহ পাকের অসন্তুষ্টির চেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকর আর কিছুই নেই। তাই রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া সহ রোজার সকল বিষয় গুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
রােজা ভঙ্গের কারণঃ
এর জন্য শুধু কাজা রােজা রাখলেই চলবে-
১. কুলি করার সময় হঠাৎ গলার ভিতর পানি ঢুকে গেলে।
২. জোরপূর্বক গলার ভিতর কোন কিছু ঢুকিয়ে দিলে।
৩. নাকের ভিতর বা কানের ভিতর ঔষধ ঢেলে দিলে।
৪. ইচ্ছেকৃত ভাবে মুখ ভর্তি বমি করলে।
৫. অখাদ্য, যথা- কাঁকড়, মাটি, কাঠের টুকরাে খেয়ে ফেললে।
৬. পায়খানার রাস্তায় বা গুহ্যদ্বারে পিচকারী দিলে।
৭. পেটে বা মস্তিষ্কে ঔষধ লাগানাের ফলে তার তেজ যদি উদর বা মস্তিষ্কে প্রবেশ করে।
৮. নিদ্রাবস্থায় পেটের ভিতর কিছু ঢুকলে।
৯. রাত আছে মনে করে বা সূর্য ডুবে গেছে মনে করে কিছু খেয়ে ফেললে।
১০. অনিচ্ছাকৃত বমি আসার পর মুখের ভিতর থেকে তা পুনরায় গিলে ফেললে।
১১. দাঁত থেকে ছোলা পরিমাণ কিছু বের করে তা গিলে ফেললে।
যে সব অবস্থায় রােজা ভঙ্গ করা যায়
১. অসুস্থ অবস্থায় রােজা রাখলে রােগ বৃদ্ধির আশংকা থাকে, তবে রােজা থাকলেও এমতাবস্থায় রােজা ভাঙ্গা জায়েয।
২ রােজাদার মহিলার যদি রােজা রাখার ফলে দুধ কমে যাওয়ার আশংকা থাকে এবং শিশুর কষ্ট হয়, তখন উক্ত মহিলা রােযা ভঙ্গ করতে পারবে।
৩. বয়স বেশি হওয়ার কারণে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়লে।
৪. রােজা রাখার কারনে গর্ভের সন্তান যদি ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
৫. ক্ষুধা তৃষ্ণায় মৃত্যুর আশংকা থাকলে।
৬. মুসাফির অবস্থায় থাকলে।
৭. সাপে দংশন করলে।
৮. মহিলাদের হায়েয-নেছাফ হলে রােযা ভঙ্গ করবে।
যে সকল কাজে রােজা ভঙ্গ হয় না
১. রােযা রাখা অবস্থায় ভুলবশতঃ কোন কিছু পানাহার করে ফেললে, তবে রােযার কথা মনে পড়লেই মুখে যা কিছু আছে সব ফেলে দিতে হবে।।
২. তৈল মালিশ করলে।
৩. মুখের থুথু গিলে ফেললে।
৪. সামান্য পরিমাণ বমি হলে।
৫. নাক কিংবা কানের মধ্যে পানি ঢুকলে।
৬. আতর, লােবান, আগর বাতি প্রভৃতির সুবাস গ্রহণ করলে।
৭. স্বপ্নদোষ হলে।
৮. চোখের মধ্যে সুরমা লাগালে।
৯. মিথ্যা কথা ও অশ্লীল বাক্যালাপ করলে।
১০. চুকা ঢেকুর ওঠলে।।
১১. অন্যের গীবত করলে।
১২. হঠাৎ করে অনিচ্ছা সত্ত্বেও মশা-মাছি বা ধূলাে-বালি গলার ভিতরে। ঢুকলে।
১৩. দিনের বেলায় ফরয গােসল করলে।
১৪. রােগবশতঃ বিনা উত্তেজনায় মনি নির্গত হলে।
রােজার কাফফারা
যাদের উপর রােযার কাযা ও কাফফারা উভয়ই আদায় করা ওয়াজিব হয়ে যায়, তারা একটি রােযার পরিবর্তে একটি রােযা রাখবে তার কাফফারা স্বরূপ। একটি সুস্থ সবল নিখুঁত গােলামকে মুক্ত দিবে। তাতে যদি সক্ষম না হয়, তবে ৬০ জন মিসকীনকে পরিপূর্ণ সহকারে আহার করাবে। তাতেও যদি সক্ষম না হয়, তবে একজন মিসকীনকে নিজে যেভাবে আহার করে ঠিক সেভাবে ৬০ দিন পর্যন্ত আহার করাবে। এতেও যদি অক্ষম হয়, তবে দু’মাস লাগাতার রােযা রাখবে। কোনক্রমে যদি ৬০ দিনের মধ্যে একটি রােযাও ছুটে যায়, তবে আবার প্রথম থেকে ৬০ দিন পূর্ণ করতে হবে। পূর্বের দিনগুলাের রােযা কোন কাজে আসবে না। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, যেন কাফফারা আদায় করার সময়ে বছরে হারামের ৫ দিনে না পড়ে। আর স্ত্রী লােকের ক্ষেত্রে যদি কাফফারা আদায় করা অবস্থায় হায়েয উপস্থিত হয়, তবে হায়েযের সময় সীমার মধ্যে রােজা না রেখে পবিত্র হওয়া মাত্রই রােযা রাখা আরম্ভ করবে।
ইফতারের বিবরণ
সারা দিন রােযা রাখার পর সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে যে আহার বা পানাহার করে রােযা ভঙ্গ করা হয়, তাকে ইফতার বলে। সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে ইফতারের সময়। তবে বেশি সময় থাকে না। তাই যথাসম্ভব সাথে সাথেই ইফতার করতে হবে। আজ আমরা জানবো রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া সহ রোজার যাবতীয় বিষয়াবলী সম্পর্কে।
ইফতারের দোয়া
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়াতাওয়াক্কালতু আলা রিযকিকা ওয়াফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আর রাহমানির রাহিমীন।
বাংলা অর্থঃ “হে আল্লাহ! তােমারই সন্তুষ্টির জন্য রােযা রেখেছি এবং তােমারই রিযিকের ওপর নির্ভর করেছি এবং এখন তােমারই অনুগ্রহে ইফতার করছি।
একজন রােযাদারকে এক গ্লাস ঠান্ডা পানির দ্বারা ইফতার করিয়ে অনেক সাওয়াবের অধিকারী হতে পারি। এটা অত্যন্ত অনুধাবনের বিষয়। ইফতারের সময় দু’আ করা চাই। এটা দু’আ কবুলের বিশেষ সময়। দু’আর পর এই দু’আ করে ইফতার করবে-
“হে আল্লাহ! আপনার রহমতের আশায় রােজা রেখেছি এবং আপনার দেওয়া হালাল রুজীর মাধ্যমে ইফতার করিতেছি”।
ইফতারের ফযীলত
আল্লাহ তা’য়ালা রােযার মধ্যে যেমন ফজীলত দান করেছেন, রােযার ইফতারের মধ্যেও তেমন ফযীলত দান করেছেন। রােযাদারগণ ইফতার সামগ্ৰীসমূহ সম্মুখে নিয়ে যখন ইফতার করার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে, নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে একটি দানাও তুলে মুখে দেন না, তখন মহান আল্লাহ বান্দার এ মহান আল্লাহ ভীরুতা দেখে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন। রাসূল [সঃ] বলেছেন- তােমরা যখন ইফতার কর, তখন খুরমা দ্বারা ইফতার কর। কারণ এর মধ্যে বরকত আছে। খুরমা না থাকলে যে কোন ফল অথবা পানি কিংবা দুধ দ্বারা ইফতার করা যায়।
অপরকে ইফতার করানাের ফযীলত সম্পর্কে রাসূল (সঃ) বলেছেন-
উচ্চারণঃ ফামাং ফাক্বারা ফিহি ছায়েমান কানা মাগফিরাতুল লিযুনুবিহি ওয়া ইকু রাকাবাতিম মিনান নার।
অর্থাৎঃ “যদি কোন ব্যক্তি রমযান মাসে কোন রােজাদারকে ইফতার করায়, তবে তাহাই হয়ত তার গুনাহ মাফ এবং দোযখের আগুন থেকে মুক্তির কারণ হয়ে যেতে পারে।”
অন্য এক হাদীসে রাসূলে পাক (সঃ) ইরশাদ করেছেন-
উচ্চারণঃ ফামাং ফাল্বারা ছায়েমান আলা তামারাতিন আও শারবাতিন মিম মাইন আও মাযকাতিন লাইসা কানা লাহু মাগফিরাতিন ওয়া শাহরু আউয়্যালিহি রাহমাতুন ওয়া আওসাতুহু মাগফিরাতুন ওয়া আখারুহু ইত্বকুম মিনান্নার।
অর্থাৎঃ “যে ব্যক্তি রােযাদারকে কিছু খেজুর বা সামান্য পানির শরবত কিংবা এক ঢােক দুধ দ্বারা ইফতার করায়, তা তার জন্য ক্ষমার কারণ হয়”।
হাদীস শরীফে আছে, “যে ব্যক্তি কোন রােযাদারকে এক ঢােক পানির দ্বারা ইফতার করাবে, সে রােযাদারের মত সাওয়াবে অধিকারী হবে। এতে রােযাদারের সাওয়াবে কোন প্রকার কম হবে না।”
শেষ কথা:
পরিশেষে বলতে চাই, কেউ যদি আগ্রহের সাথে রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া সহ উল্লেখিত বিষয় সমূহ মনেযোগ সহকারে অধ্যয়ন করে আশা করি রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া সহ সকল বিষয়ে অনেক বেশি জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হবে। তো আজকের আলোচনা কেমন হল তা কমেন্টস করে জানান এবং বেশি বেশি শেয়ার করতে ভুলবেন না।