সাপ্তাহের প্রতি শুক্রবার পবিত্র জুমা বার। প্রতি সাত দিনে এই দিনটি একবার আসে। পবিত্র জুমার দিনকে গরীবের হজ্বের দিনও বলা হয়ে থাকে। জুমার দিন যােহরের নামাযের পরিবর্তে দুই রাকত জুমার নামায আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ। ইহার ওয়াক্ত যােহরের ওয়াক্তের সময়। জুমার দিন দুপুরে গােসল করিয়া পরিষ্কার পােষাক পরিধান করিয়া আযানের সাথে সাথে মসজিদে উপস্থিত হইয়া জুমার নামায আদায় করিতে হয়। জুমার দিন যত আগে মসজিদে যাওয়া যায় তত বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। তাই জুমার দিন আযানের সাথে সাথে মসজিদে যাওয়া উত্তম। নিন্মে জুমার নামাজের নিয়ত ও রাকাত সংখ্যা আলোচনা করা হলঃ
জুমার নামাজের নিয়ত
চার রাকাত কাবলাল জুমা, তারপর দুই খুতবা পাঠের পর দুই রাকাত ফরজ নামাজ তারপর চার রাকাত বা’দাল জুমা আদায় করতে হয়। জুমার দিন সময় থাকলে তাহিয়্যাতুল অজু, সুন্নতুল ওয়াক্ত, দুখলুল মসজিদ ও নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। কিন্ত জুমার দিনের ঐ নামাজগুলি জুমার নামাজের অংশ নয়।
মূলত জুমার নামাজ বার রাকাত। প্রথমে চার রাকাত কাবলাল জুমা, তারপর দুই রাকাত ফরজ এবং তারপর চার রাকাত বা’দাল জুমা পড়তে হয়। প্রতি বারের নামাজেই আলাদা আলাদা নিয়ত করতে হয়। নিন্মে প্রতি বারের জুমার নামাজের নিয়ত সমূহ আলোচনা করা হলঃ
চার রাকাত কাবলাল জুমার নিয়ত
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা আরবায়া রাকআতি ছালাতিল কাবলাল জুমুআতি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
বাংলা নিয়তঃ আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কেবলামুখী হইয়া চার রাকআত কাবলাল জুমআ সুন্নাত নামায আদায় করার নিয়ত করিতেছি, আল্লাহু আকবার। |
দুই রাকাত জুমার ফরজের নিয়ত
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উসকিতা আন যিম্মাতি ফারদুৰ্জ্জুহরী বিআদায়ি রাকাতাই ছালাতিল জুমুআতি ফারদুল্লাহি তাআলা ইকতাদাইতু বিহাযাল ইমামি মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার ।
বাংলা নিয়তঃ আমি আল্লাহর সন্তষ্টির উদ্দেশ্যে কেবলা মুখী হইয়া আমার উপর যােহরের ফরজ নামায উত্তীর্ণ করিতে জুমআর দুই রাকআত ফরজ নামায এই ইমামের পিছনে পড়িতে নিয়ত করিলাম, আল্লাহু আকবার।।
চার রাকআত বা’দাল জুমআর নিয়ত
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা আরবায়া’ রাকাআতি ছালাতিল বা’দাল জুমআতি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তাআলা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।
বাংলা নিয়তঃ আমি আল্লাহর সন্তষ্টির উদ্দেশ্যে কেবলামুখী হইয়া চার রাকাত বা’দাল জুমআর সুন্নত নামাযের নিয়ত করিলাম, আল্লাহু আকবার।
জুমার নামাজ যাদের উপর ফরজ ও যাদের উপর নয়
জুমার নামাজ প্রাপ্তবয়স্কদের উপর ফরজ। বাকী পাঁচ ওয়াক্ত নামায যেমন অপ্রাপ্ত বয়স্কদের উপর ফরয নয়, তেমনি জুমার নামাযও ফরয নয়। বিশেষ করে জুমার নামাজ পুরুষদের উপর ফরজ।
মুকীম ব্যক্তির উপর জুমার নামাজ ফরজ নয়। যে ব্যক্তি কারো ক্রীতদাস নয় তার উপর জুমআর নামায পড়া ফরজ। এবং ক্রীত-দাসীর উপর জুম্মার নামাজ ফরজ নয়। যে সমস্ত ওজরের কারণে জামায়াতে উপস্থিত না হওয়ার অনুমতি রয়েছে, সে সমস্ত ওজরের কোনটি যার নাই, তার উপর জুম্মার নামাজ ফরজ। জুমআর নামাযের দিন বেশ কিছু সুন্নত রয়েছে। এই দিনে নতুন জামা বা পাঞ্জাবি পরা, আতর নেওয়া, হাত-পায়ের নখ কাটা ইত্যাদি সুন্নত।
উপরিউক্ত আলোচনায় জুমার নামাজের নিয়ত ও জুমার নামাজের খুটি নাটি বিষয় সমূহ আলোচনা করা হল। আমাদের বিশ্বাস ধৈর্য্য ধরে অধ্যায়ন করলে অবশ্যই উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই ধৈর্য্য সহকারে অধ্যায়ন করুন এবং শেয়ার করে বন্দুদের জানিয়ে দেন। আল্লাহ হাফেজ।।
Very useful content.