এ পৃথিবীতে কেউই স্বয়ং সম্পূর্ন নয়। প্রয়োজনে একজন অন্যজনের দারস্থ হতে হয়। ইসলামে ঋণের বৈধতা রয়েছে। তবে সময়মত তা পাওনাদারকে তার পাপ্য বুঝিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যাহোক, মানব জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে ঋণের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু মাঝে মাঝে তা পরিষোধ না করতে পারার কারনে কত লোক যে তাদের বাড়ী ছাড়তে হয়েছে তার কোন শেষ নেই। এজন্য সেই কঠিন মূহর্তে আল্লাহর দরবারে ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া করা আবশ্যক। আমরা সঠিক উপায়ে যদি আল্লাহর কাছে ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া করি আমার বিশ্বাস আল্লাহ আমাদেরকে খালি হাতে ফিরাবেন না।
ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া
আজ আমরা আজকের আলোচনায় ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া এবং দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া সম্পর্কে আলোচনা করবো। নিন্মে ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া সমূহ প্রদত্ত হলঃ
দোয়া-০১
আরবীঃ
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكِ عَمَّنْ سِوَاكَ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাকফিনী বিহালা-লিকা ‘আন হারা-মিকা ওয়া আগনিনী বিফাদ্বলিকা ‘আম্মান সিওয়া-ক।
অর্থঃ ইয়া আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার হালাল দ্বারা পরিতুষ্ট কর, আর তোমার হারাম থেকে ফিরিয়ে রাখ এবং তোমার অনুগ্রহ দ্বারা তুমি ছাড়া অন্য সকলের থেকে আমাকে অমুখাপেক্ষী করে দিও।”
দোয়া-০২
আরবীঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘উযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল-‘আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন দ্বালা‘য়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজা-ল।
অর্থঃ “হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে।”
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া
মানব জীবনে চলার পথে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। খালেস নিয়তে কেউ যদি আল্লাহর কাছে তা থেকে মুক্তির দোয়া করে তবে আল্লাহ তায়ালা তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দান করেন। নিন্মে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া সমূহ আলোচনা করা হলঃ
দোয়া-০১
আরবীঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَرَبُّ الْأَرْضِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيم
উচ্চারণঃ লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হুল ‘আযীমূল হালীম। লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু রব্বুল ‘আরশিল ‘আযীম। লা ইলাহা ইল্লাল্লা-হু রব্বুস সামা-ওয়া-তি ওয়া রব্বুল আরদ্বি ওয়া রব্বুল ‘আরশিল কারীম।
অর্থঃ “আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তিনি মহান ও সহিষ্ণু। ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তিনি মহান আরশের রব্ব। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তিনি আসমানসমূহের রব্ব, যমীনের রব্ব এবং সম্মানিত আরশের রব্ব।”
দোয়া-০২
আরবীঃ
اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو، فَلاَ تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ، وَأَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা রহ্মাতাকা আরজু ফালা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বারফাতা ‘আইন, ওয়া আসলিহ্ লী শা’নি কুল্লাহু, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা
অর্থঃ “ইয়া আল্লাহ! আমি তোমার রহমতেরই আশা করি। তাই তুমি এক নিমেষের জন্যও আমাকে আমার নিজের কাছে সোপর্দ করে দিও না। তুমি আমার সার্বিক বিষয়াদি সংশোধন করে দিও। তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই।”
দোয়া-০৩
আরবীঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظّالِمِينَ
উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন।
অর্থঃ “আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আপনি পবিত্র-মহান, নিশ্চয় আমি যালেমদের অন্তর্ভুক্ত।”
দোয়া-০৪
আরবীঃ
اللَّهُ اللَّهُ رَبِّي لاَ أُشْرِكُ بِهِ شَيْئاً
উচ্চারণঃ আল্লাহু আল্লাহু, রব্বী, লা উশরিকু বিহি শাই আন।
অর্থঃ “আল্লাহ! আল্লাহ! তিনিই আমার রব! আমি তাঁর সাথে কোন কিছুর শরিক করি না।
পরিশেষে শুধু একটি কথাই বলতে চাই, আল্লাহ দয়ালু তিনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাই তাঁর অভ্যাস। আমার বিশ্বাস কেউ যদি খালেস নিয়তে এবং আল্লাহর উপর ভরসা রেখে উপরিউক্ত দোয়া সমূহ নিয়মিত পাঠ করে তবে তার উদ্দেশ্য অবশ্যই সফল হবে, ইনশা আল্লাহ। তো বন্ধুগন আজকের আলোচনা কেমন হয়েছে কমেন্টস করে জানাবেন। আশা করি ভালো লেগেছে। আজ এ পর্যন্ত বেশি বেশি শেয়ার করতে ভুলবেন না। আল্লাহ হাফেজ।।