আযান অর্থ আহব্বান বা ডাকা। প্রত্যেক ফরজ নামায পড়িবার পূর্বে আজান দেওয়া ছুন্নতে মােয়াক্কাদা- (কর্তব্য স্বরূপ)। আমরা প্রতিদিন পাঁচ বার আযান শুনতে পাই। আযান দেওয়ার ও শুনিবার সময় আমাদের অবশ্যই আদব রক্ষা করা জরুরী। আযান দেওয়ার ও শুনিবার সময় কথা বলা নিষেধ। সে সময় দুনিয়ার কোন কথা বলিলে ৪০ বৎসরের নেকী নষ্ট হইয়া যায়। আজ আমরা আযান, আযানের জবাব, আযানের নিয়ম ও আযানের দোয়া নিয়ে সর্ম্পূণ আলোচনা করবো। আমাদের প্রত্যেকের উচিত আযান সম্পর্কে জানা এবং তদঅনুযায়ী আমল করা। তো চলুন আযানের দোয়া ও আযানের নিয়ম কানুন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
আযানের দোয়া
আজান ও আজানের দোয়া সমূহ নিন্মে দেওয়া হল
প্রথমে দুই দমে চারবার বলিবেঃ
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।
অর্থাৎ — আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান।
পুনরায় দুইবার বলিবেঃ
উচ্চারণ: আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু।
অর্থাৎ — আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ব্যতীত দ্বিতীয় কোন উপাস্য নাই।
পুনরায় দুইবার বলিবেঃ
উচ্চারণ: আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাছুলুল্লাহ।
অর্থাৎ — আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, মােহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।
পুনরায় দুইবার (ডানদিকে মুখ ফিরাইয়া) বলিবেঃ
উচ্চারণ: হাইয়্যা আলাচ্ছালাহ।
অর্থাৎ — নামাযের জন্য প্রস্তত হও।
পুনরায় দুইবার (বামদিকে মুখ ফিরাইয়া) বলিবেঃ
উচ্চারণ: হাইয়্যা আলাল ফালাহ।
অর্থাৎ — শুভ কাজের জন্য প্রস্তুত হও।
পুনরায় দুইবার বলিবে (ফজরের আজানেঃ
উচ্চারণ: আচ্ছালাতু খাইরুম মিনান্নাউম।
অর্থাৎ — নিদ্রা হইতে নামায উত্তম।
এক্বামতে দুইবার বলিবেঃ
উচ্চারণ: ক্বাদক্বা-মাতিচ্ছালাহ।
অর্থাৎ — বাস্তবিক নামায আরম্ভ হইয়াছে।
পুনরায় দুইবার বলিবেঃ
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।
অর্থাৎ — আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান।
শেষে একবার বলিবেঃ
উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
অর্থাৎ — আল্লাহ ব্যতীত দ্বিতীয় উপাস্য নাই।
আযানের জবাব
আমাদের প্রত্যেকের উচিত ধীর ও স্থিরভাবে আজান শুনা ও জওয়াব দিয়া নিম্নলিখিত আযানের দোয়া বা মােনাজাত করা। মােয়াজ্জিন যখন যেই যেই শব্দ উচ্চারণ করিয়া আজান দিবে, শ্রোতাগণও তখন সেই সেই শব্দের জওয়াবে তাহাই বলিবে। কিন্ত “হাইয়্যা আলাচ্ছালাহ” ও “হাইয়্যা আলাল ফালাহ” শব্দের জওয়াবে “লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” বলিবে অর্থাৎ আল্লাহর অনুগ্রহ ব্যতীত পাপ কার্য হইতে ফিরিবার ও নেক কাজ করিবার কাহারও সাধ্য নাই। আর ফজরের নামাযের আজানের সময় “আচ্ছালাতু খাইরুম মিনান্নাউম” এর জওয়াবে ‘ছাদ্দাক্তা ওয়া বারারতা’ বলিবে অর্থাৎ সত্য এবং ভালই বলিয়াছ। হাদীছে তিরমীজী শরীফে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি সন্তষ্টচিত্তে আজান শুনিয়া উহার জওয়াব আদায় করতঃ মােনাজাত করিবে, কেয়ামতের দিন আল্লাহতাআলা বিশেষ সন্তষ্ট হইয়া তাহাকে বেহেশতে স্থান দিবেন। (তিরমীজী)
আজানের দোয়া
নিন্মে আযানের দোয়া আরবীতে প্রদত্ত হলঃ
আযানের বাংলা উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা রববা হা- যিহিদ্ দা‘ওয়াতিত্ তা-ম্মাতি ওয়াস সালা-তিল ক্বা-’ইমাতি আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদীলাতা ওয়াব্‘আছহু মাক্বা-মাম মাহমূদানিল্লাযী ওয়া‘আদতাহ, ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী‘আদ।
আযানের বাংলা অর্থ: “হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাতের রব্ব! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে ওসীলা তথা জান্নাতের একটি স্তর এবং ফযীলত তথা সকল সৃষ্টির উপর অতিরিক্ত মর্যাদা দান করুন। আর তাঁকে মাকামে মাহমূদে পৌঁছে দিন, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাঁকে দিয়েছেন। নিশ্চয় আপনি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না।” [বুখারী ১/২৫২, নং ৬১৪
আযানের নিয়ম
ইমাম ও মােয়াজ্জিন স্থায়ী নহে, এরূপ মসজিদে প্রত্যেক জামায়াতে একামত বলা উত্তম। অজু, বে-অজু সকল অবস্থায় আজান শুনিলে জওয়াব দেওয়া উত্তম। জুময়ার দ্বিতীয় আজান শুনার পর কোন কাজ করা হারাম। নামায, খুৎবা, হায়েজ, নেফাছ, এলেম শিক্ষা, ছােহবত করা, পেশাব পায়খানা ও খানাপিনার অবস্থায় আজানের জওয়াব দেওয়া অনাবশ্যক। আজান, এক্বামতের সময় কথা বলা বা কাহারও ছালামের জওয়াব দেওয়া দুরস্ত নাই। আজান দেনেওয়ালার বিনা হুকুমে অন্যের এক্বামত বলা মাকরূহ। আজান ও একামতের সময় মুছুল্লীগণ বসিয়া থাকিবে, দাঁড়াইয়া থাকা মাকরূহ। আজকের আলোচনায় আমরা জানলাম আযান, আযানের জবাব, আযানের নিয়ম ও আযানের দোয়া সম্পর্কে। আমাদের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আযান মনোযোগ সহকারে শুনা, জবাব দেওয়া ও তার পরপরই আযানের দোয়া পাঠ করা। বেশি বেশি করে শেয়ার করে সকল বন্দুদেরকে জানার সুযোগ করে দিন। আল্লাহ আমাদের সকলকে জানার ও বুঝার তৈফিক দান করুন। আমিন।।
Mashallah 😍🥰 onk sundor kore bujhiyechen Allah apnake uttom protidan Daan korun
Jajakallahu khoiron
মাশাআল্লাহ
ইন্নাকা লা তুখলীফুল মী’আদ। এটা নাকি পরবর্তী সংযোজন। যা বিদআতের সামীল।
এই মর্মে মোহাদ্দিস গন প্রচার করে থাকেন। সত্যতা অনুসন্ধানের আর্জি জানাচ্ছি।